রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৭

জীবন মানে এক ম্যারাথন দৌড়!!

একবার দৌড় প্রতিযোগিতায় ৫০ জন দৌড়বিদ অংশ নিয়েছিলেন। ত্রিশ মাইলের ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা। দৌড়বিদদের মধ্যে ১০ জনের বয়স ছিল চল্লিশ বছরের ঊর্ধ্ব। ১৫ জনের বয়স ছিল ত্রিশ বছর করে। আর বাকি ২৫ জন ছিল সদ্য যৌবনে পা দেওয়া তরুণ, যাদের বয়স ১৮-২২ বছরের মধ্যে।

যখন দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হলো, তার ১০-১২ মিনিটের মধ্যেই দেখা গেল— অল্প বয়সী দৌড়বিদেরা তিন-চার মাইল পথ অতিক্রম করেছে। ত্রিশ বছরের দৌড়বিদেরাও অনেকদূর এগিয়েছেন। কিন্তু চল্লিশ বছরের অধিক বয়সের দৌড়বিদেরা এক মাইল পথও অতিক্রম করতে পারেন নি। দর্শকরা টিভির পর্দায় এই দৌড়প্রতিযোগিতা দেখছিলেন। অনেক দর্শক তাদের নিজ নিজ পর্যবেক্ষণ-শক্তি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করতে লাগলেন। কেউ বললেন, এই বুড়ো লোকগুলোকে এখানে নামানোই ভুল হয়েছে। কেউ বললেন, গাধা দিয়ে কি আর হালচাষ হয়?
যখন ম্যারাথন দৌড় শেষ হলো, তখন দর্শকরা ভীষণ অবাক হলো। কেননা, প্রতিযোগিতায় যে দু’জন প্রথম-দ্বিতীয় হয়েছেন, তাঁদের বয়স চল্লিশ বছরের ঊর্ধ্বে।
আসলে ম্যারাথন দৌড় একটা দীর্ঘ প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় ধৈর্য-বুদ্ধি-শক্তি সবকিছুরই প্রয়োজন হয়। যে অল্প বয়সী তরুণরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল, তাদের প্রচণ্ড শারীরিক শক্তি ছিল। কিন্তু তারা ছিল অনভিজ্ঞ। তাইতো তারা প্রথমে খুব জোরে দৌড়িয়ে প্রথম ঘন্টাতেই পনের-ষোলো মাইল পথ পাড়ি দিয়েছিল। এরপর তাদের দম-শক্তি ফুরিয়ে যাওয়ায় আর দৌড়াতে পারেনি। পক্ষান্তরে, যাঁরা অভিজ্ঞ ছিলেন তাঁরা প্রথমে খুব ধীরে দৌড়েছিলেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল, গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে কোনোভাবেই যেন দম-শক্তি ফুরিয়ে না যায়।
আমাদের জীবনও একটা ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা। বলা যায়, ম্যারাথনের ম্যারাথন। এই ম্যারাথনে জয়ী হতে প্রয়োজন ধৈর্য-বুদ্ধি-অভিজ্ঞতার ঝুলিকে সমৃদ্ধ করা। অল্প বয়সী তরুণরা অনেক ভুল করে। অনেক সময় তারা যে ভুলটি করছে, সেই ভুলকেই তাদের কাছে শতভাগ সঠিক বলে মনে হয়! এটা অবশ্য তাদের দোষ না, তাদের বয়সের দোষ! বয়স বাড়ার সাথে সাথে পূর্বের ভুলগুলো তাদের চোখে ভেসে ওঠে এবং তারা অনুতপ্ত হয়।
জীবনের ম্যারাথনে জয়ী হতে ধৈর্যশীল ও পরিশ্রমী হতে হবে— এটা চিরন্তন সত্য। এর চেয়েও বড় সত্য, সবকিছুর আগে নিজের চরিত্রকে ঠিক রাখতে হবে। চরিত্রবান তরুণদের জীবনের ট্রেন কখনো লাইনচ্যুত হয় না। হয়তো তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে একটু দেরি হয়। কিন্তু সুনির্দিষ্ট গন্তব্যে একদিন না একদিন তারা পৌঁছাবেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

একুশের আক্ষেপানুরাগ

বেশ কয়েক বছর থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার ছিল অফিস আদালতে শতভাগ বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিদেশী ভাষার ব্যবহার কমানো, ব্যানার, ফেস...