ক্লাসে শিক্ষক পড়া নিচ্ছেন। প্রথমেই সামনে বসা একজন ছাত্রের নিকট একটি প্রশ্ন করলেন। ছাত্রটি শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে এমন সময় উত্তর দেওয়া শেষ হবার আগেই মাঝপথে শিক্ষক বলে উঠলেন, "হচ্ছে না"।
ছাত্রটি আর কোনও কথা বলতে পারলো না।
শিক্ষক এবারে পেছনের আরেকজন ছাত্রের নিকট একই প্রশ্ন করলেন।
এবারে সেই ছাত্রটিও উত্তর দিচ্ছে এমন সময় মাঝ পথে শিক্ষক তাকেও বললেন, "হচ্ছে না"।
কিন্তু ছাত্রটি তখন থেমে না যেয়ে নতুন করে আবার উত্তর দেওয়া শুরু করলো এবং শেষ পর্যন্ত বলে গেলো। এবারে শিক্ষক জবাব দিলেন, "হ্যাঁ, হয়েছে"।
এবারে প্রথম সেই সামনে বসা ছাত্রটি বলে উঠলো, "মাফ করবেন স্যার, কিন্তু আমিও তো এই উত্তরগুলোই দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আপনি তো আমার উত্তরগুলো শেষ পর্যন্ত শুনলেন না"!
এবারে শিক্ষক জবাব দিলেন, "তুমি তোমার উত্তরের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলে না ! তাই আমি তোমাকে থামানো মাত্রই তুমি থেমে গিয়েছিলে, অথচ তুমি যদি থেমে না যেয়ে তোমার উত্তরের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত থাকতে তবে অবশ্যই তোমার উত্তর বলা চালিয়ে যেতে।"
শিক্ষক এবারে সকল ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "এই ব্যাপারটা সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তোমাকে যখনই কেউ থামাতে আসবে তখনই নিজেকে প্রমান করবে - "আমিও পারি"।
কিন্তু অন্যের কথামত থেমে যাওয়ার অর্থই হল নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া।
শিক্ষক আরও বললেন, "তোমরা অনেকবার এমন কিছু কথা শুনবে-
"না,তুমি পারবে না।"
তখনই তোমাকে প্রমান দিতে হবে "আমি পারবো"।
তোমাকে অনেকে বলবে, "হতে পারবে না"।
তখনই তোমাকে প্রমান দিতে হবে, "আমি হয়ে দেখিয়েছি "।
"মনে রাখবে, মানুষ সর্বদা তোমাদেরকে থামাতে চাইবে, কিন্তু তুমি যদি জানো যে তুমি ঠিক করছ তাহলে অবশ্যই সে অনুপাতে কাজ করে তার প্রমান দিতে হবে। আর যদি প্রমান দিতে না পারো তাহলে বুঝতে হবে "তুমি শুধুই বাকপটু, এছাড়া কোনও গুন নেই"।
-আখতার ফারুক।
আমি খুবি সাধারণ একজন। ভালবাসি বই পড়তে। ভালবাসি ভ্রমণ করতে। Mobile No- 0914139916, 01614139916 afaruque.faruque@gmail.com www.facebook.com/aktar.faruque.ctg
শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭
আমি পারবো-ই
সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭
ক্ষমা করো;
হয়তো তুমি আমাকে ভুলে যাবে ভুলে যাবে সেই সোনালী প্রহরের আবেগঘন স্মৃতিগুলি। যা তুমি আমি সাজিয়েছিলাম একান্তই নিজের মতো করে। হয়তো তোমার হৃদয়ের বারান্দাতে অপেক্ষমান দেখবে না সেই চিরচেনা আমাকে। হৃদয়ের দরজাতে আর কড়া নেড়ে বলা হবেনা "আজো ভালোবাসি তোমাকে"! হয়তো পাতাগুলি আলতো করে একের পর এক ডান থেকে বামে যাবে। হৃদয়ের ঘুমন্ত ক্ষতগুলি জাগ্রত হবে, সমানুপাতিক হারে জমাট বেদনাতে রক্তক্ষরণ হবে, জরুরী কোন এক সীমান্তে এসে থমকে দাঁড়াবে সকল অনুভূতি। সেখানে দেখব তুমি নেই; আর আছে বিস্তৃত সাদা মাঠ আর বুক ভরা হাহাকার। মনকে কি বলে সান্ত্বনা দেব ভেবেই পাই না! তবুও দোয়া করি ভাল থেকো। ক্ষমা করো- যদি তোমাকে ভালবেসে ভুল করে থাকি।
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭
সে স্মৃতি!
সে দিন কষ্ট ছিল বেশ
এখনো রয়ে গেছে রেশ।
সেদিন দুচোখে বর্ষা মেখে
কাবাবের শিখে হৃদয় ছ্যাঁকে
তোমায় জানিয়েছি বিদায়-
সে স্মৃতি এখনো কাঁদায়!!
বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৭
অপেক্ষায়-
তুমি এখনো এলে না-
সন্ধ্যা নেমে এলো।
পশ্চিমের করুণ আকাশ,
গন্ধে ভরা হাওয়া,
আর পাতার মর্মর-ধ্বনি।
সবি তোমারি প্রতিক্ষায়!
বলতে চাই ভালবাসি।
আমি নোনা জলে সিক্ত ঠোটে
একচিলতে হাসি চাই,
আমি সমুদ্রতীরে গোধূলী লগ্নে
নগ্ন পায়ে হাটতে চাই।
আমি পাহাড় চূড়ায় দাঁড়িয়ে
চিৎকার করে বলতে চাই- ভালোবাসি!
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায়।
শুধু তোমার জন্য-
আমি আর একবার হাসতে চাই,
আর একবার প্রানখুলে বাচতে চাই।
আরো একবার নিশ্বাস ভরা বুকে
বলতে চাই- ভালোবাসি!
অনেক বেশী ভালোবাসি তোমায়!
বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০১৭
ইমোশন।
"কারো ইমোশনকে যদি
উপলব্ধি করতে না পারো,
তবে তার সেই ইমোশন কে
উপহাস করার অধিকার
তোমার নেই।
ইমোশন আর অভিনয় এক জিনিষ নয়!
প্রেম!
"প্রয়োজনে যুদ্ধ কর-
প্রেম করো না। কারণ
যুদ্ধ করলে হয় তুমি
বাঁচবে, না হয় তুমি মরবে।
কিন্তু প্রেম করলে তুমি না
পারবে বাঁচতে, না পারবে
মরতে।"
বাস্তবতা।
রঙিন কাগজের নৌকা
দেখতে অনেক অনেক
সুন্দর হয়, কিন্তু পানিতে
ভাসালে তা ভিজে ডুবে যায়।
তেমনি আবেগ যতই রঙিন ও
মধুর হোক না কেন-
বাস্তবতার সামনে সেটা
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বিলীন
হয়ে যায়। বাস্তবতা অনেক
কঠিন সত্য!!!
তারপর ও মানুষ এগিয়ে যায়-----
মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭
ভালোবাসা-
ভালবাসা হলো একরাশ মুগ্ধতা। যা আসলে কোন নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে না। ভালবাসা মানে ভোগ আবার ভালবাসা মানে ত্যাগ, sacrifice। দুর থেকেও ভালবাসা হয় আবার কাছ থেকেও ...।। সর্বোপরি ভালবাসা হলো constant বা ধ্রুবক।
স্বার্থ ত্যাগ করে অন্তরের সবটুকু সুখ দান করে দিয়ে বিপরিতের (ভালবাসার মানুষটির) সবটুকু কষ্ট নিরবে বয়ে চলাকে ভালবাসা বলে।
আমার কাছে ভালবাসা মানে এক অসাধারন অনুভুতি, তা দুঃখের হউক অথবা সুখের, আমরা সযত্নে তা আগলে রাখি সারা জীবন।
অামার কাছে ভালোবাসা হল একটুখানি ত্যাগ , একটুখানি খুশি রাখা , একটুখানি অাবেগ। সব মিলিয়ে যদি বলি, ভালোবাসার এই পবিত্রতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর কারণে স্বর্গীয় অাবেগের ব্যাপারগুলো পঙ্কিলতায় পূর্ণ হচ্ছে। ভালোবাসা অাবার একটা অসাধারণ ফাঁদ! কেউ সেখানে পড়লে ছাড়ানো দুঃসাধ্য!
ভালবাসা হচ্ছে মরুভূমির মরিচীকার মত যা দূর থেকেই চিকচিক করে আকর্ষণ করে কিন্তু নিকটবর্তী হলেই বাস্তবতা বুঝে। ভালবাসা মানুষের জীবনকে গতিময় করে রোমান্টিক করে আবার ভালবাসায় প্রতারিত হয়ে মানুষের ভবিষ্যত নষ্ট করে দেয়। ভালবাসা হচ্ছে দিল্লিকালাড্ডু যা খাইলেইও পস্তাতে হয় আর না খাইলেইও পস্তাতে হয়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ভালবাসার মর্যাদা রক্ষা করাটা অতীব জরুরী।
ভালোবাসা মানে আবেগের পাগলামি, ভালোবাসা মানে কিছুটা দুষ্টামি । ভালোবাসা মানে শুধু কল্পনাতে ডুবে থাকা,, ভালোবাসা মানে অন্যের মাঝে নিজের ছায়া দেখা
কারো জন্যো জন্য বুকের মধ্যে শূন্যতা অনুভব করার নাম ভালবাসা। কারো সাথে পাশাপাশি চলার তীব্র ইচ্ছার নাম ভালবাসা।
কারো সাথে কথা বলতে না পেরে ছটফট করার নাম ভালবাসা।
কাউকে নিয়ে ভাবতে ভাল লাগার নাম ভালবাসা। কাউকে সুখী দেখে নিজেকে সুখী ভাবার নাম ভালবাসা। কারো চোখের কোনে দু ফোঁটা জল দেখে কেঁদে ফেলার নাম ভালবাসা। কার কাছ থেকে কিছু পাবো না ভেবেও কিছু পাওয়ার আশা করার নাম ভালবাসা। (এ ভালোবাসাটা শুধুমাত্র একান্তই স্বপ্নের/মনের মানুষটির প্রতি।মায়ের ভালোবাসা, ভাইয়ের ভালোবাসা এগুলো এর মাঝে লেখা হয়নি। )
Amr kase valobasha mani jannat. Like heaven..... valo basha amon ekta jinish jeta allahr torof theke ashe... hum ami jani nowadays love mani sudu chele meyer 2/3 din er time pass.... bt amr kase er mullo onk
ღমা-বাবাღ আমাদের দেখবার অনেক আগেই থেকেই আমাদের অনেক বেশি ভালবাসে, আর এটাই হল প্ৰকৃত ভালবাসা৷
ভালোবাসা মানে নিজের সুখটুকু বিসর্জন দিয়ে অন্যের জন্য সুখময় ভবিষ্যৎ তৈরি করে দেয়া।
ভালবাসা হল ভাল বাসা..যার ভাড়া অনেক বেশি হয়,বাড়িওয়ালার পার্ট ও বেশি হয়। অন্যভাবে বললে, ভালবাসা (প্রেম-পিরিতি) হল উন্নত প্রজাতির ঘাস,যা জন্মানোর কিছুদিন পরেই গরুতে খেয়ে যায়,আর প্রেমিকের আইক্কাওয়ালা বাশ উপহার হিসাবে দিয়ে যায়। এর প্রধান পার্শপ্রতিক্রিয়া হল, প্রেমিকের মানিব্যাগ পেয়াজের মত হয়ে যায়, যা খুললেই চোখে পানি আসে।
জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতি সংলগ্ন কবি।
আধুনিক বাংলা কাব্যের ইতিহাসে ত্রিশোত্তর যুগের কবিদের মধ্যে জীবনান্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) সর্বশ্রেষ্ঠ। মনন, মেধায়, চিন্তা-চেতনায়, চিত্রকল্প রচনায়, আঙ্গিক নির্মাণ পদ্ধতিতে তাঁর কাব্য কবিতা স্বকীয় স্বতন্ত্র ধারা অনুসারী ও বিস্তারী। জীবনানন্দ দাশ সত্যিকার অর্থেই একজন অতি আধুনিক রীতিপ্রবর্তক প্রভাবশালী কবি। বুদ্ধদেব বসুর মতে- ‘‘জীবনানন্দের অবস্থান রবীন্দ্রনাথের সূর্য মঙ্গলের বাইরে। আধুনিক কবিদের মধ্যে একমাত্র জীবনানন্দরই নাম করা যেতে পারে যিনি নিজের একটি জগৎ সৃষ্টি করতে পেরেছেন। সে জগৎ ঈশ্বরের জগতের অনুকরণ নয়, জগতের ব্যাখ্যা নয়, সে জগৎ অনুভূতির আলো ছায়ায় তৈরী চেতনার জগৎ।’’ জীবনানন্দ দাশ বাংলার রূপকথার ছাঁচে গল্প বলার ধারায় কবিতায় লৌকিকতার আমেজ নিয়ে আসেন, আর মানব সভ্যতার ইতিহাস চেতনার সঙ্গে রূপসী বাংলার নিঃসর্গ প্রীতিকে চিত্রিত করেন। যার মূলে ছিল সমাজ বিবর্তনের ঐতিহাসিক বাস্তবতা। আধুনিক কবি হয়েও জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতির কবি নামে অভিহিত হয়েছেন।
প্রত্যেক শিল্পী বা সাহিত্যেকের কর্মে প্রকৃতির প্রভাব বা প্রকৃতি চেতনা থাকে। অবশ্য এক হিসেবে সকল কবিই প্রকৃতির কবি, কিন্তু সকল কবিকেই ঐ আখ্যা দেয়া যায় না। কারণ- সকলের পক্ষেই প্রকৃতি প্রধান বিষয় হয় না। অনেক কবির কাছে প্রকৃতি মানব জীবনের নানা অভিজ্ঞতার পটভূমিকা, অনেকের কাছে ইন্দ্রিয়ের বিলাস, অনেকের কাছে প্রেমের উদ্দীপনা ও প্রতিক্রিয়া মাত্র। প্রকৃতিকে অতি নিবিড়ভাবে অনুভব করেন না এমন কোন কবি নেই; কিন্তু সমগ্র জীবনকে প্রকৃতির ভিতর দিয়েই গ্রহণ করেন এমন কবির সংখ্যা অল্প, তারাই বিশেষভাবে প্রকৃতির কবি। মনেহয় আমাদের আধুনিক কবিদের মধ্যে একজনকে এ বিশেষ অর্থে প্রকৃতির কবি বলা যায়; যিনি জীবনানন্দ দাশ।
জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতি লালিত কবি। রবীন্দ্রনাথের ‘ছিন্নপত্র’র ঐতিহ্যে বাংলায় দুজন মহৎ শিল্পীর জন্ম হয়েছে। একজন ‘পথের পাঁচালীর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আরেকজন হলেন ‘বনলতা সেনে’র জীবনানন্দ দাশ।’ জীবনানন্দের কবিতার আঙ্গিকরস হলো প্রেমের রসরূপ। আর তাঁর প্রকৃতির কবিতাও প্রেমের রসে জারিত। চোখে প্রেমের মায়াজাল পরেই সৌন্দর্যমুগ্ধ কবি বাংলার প্রকৃতিকে দেখেছেন। সে দেখার মধ্যে এমন একটা কোমল মধুর স্পর্শ আছে যে, অতিতুচ্ছ নগন্য বস্তুও অসামান্য মহিমায় মন্ডিত হয়ে ওঠেছে। যেমন : ঘাস অতিতুচ্ছ বস্তু। কিন্তু কবির অপূর্ব কাব্যিক ব্যঞ্জনার কারণে তা অসাধারণ হয়ে ওঠেছে-
‘‘কচি লেবুপাতার মতো নরম সবুজ আলোয়
পৃথিবী ভরে গিয়েছে এই ভোরের বেলা;
কাঁচা বাতাবির মতো সবুজ ঘাস- তেমনি সুঘ্রাণ-
হরিণেরা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে নিচ্ছে!
আমারো ইচ্ছা করে এই ঘাসের এই ঘ্রাণ হরিৎ মদের মতো
গেলাসে গেলাসে পান করি,
এই ঘাসের শরীর ছানি- চোখে ঘষি,
ঘাসের পাখনায় আমার পালক,
ঘাসের ভিতর ঘাস হ’য়ে জন্মাই কোনো এক নিবিড় ঘাস-মাতার
শরীরের সুস্বাদ অন্ধকার থেকে নেমে।” (ঘাস)
জীবনানন্দের প্রকৃতি বিষয়ক কবিতাগুলো পড়লে বুঝতে পারা যায় জীবনকে তিনি কত গভীরভাবে ভালোবাসতেন। জীবনানন্দ মানুষকে ভালোবেসেই পেয়েছিলেন প্রকৃতিকে। প্রকৃতির বুকেই তাঁর প্রেমের, তাঁর প্রেমেজ বেদনার মুক্তি। তাইতো দেখা যায় কবি তাঁর মানসী শঙ্খমালাকে খুঁজেছেন নক্ষত্রে, সন্ধ্যার নদীর জলে, জোনাকির দেহে, ধানক্ষেতে, অগ্রাণের অন্ধকারে।
“খুঁজেছি নক্ষত্রে আমি- কুয়াশার পাখনায়-
সন্ধ্যার নদীর জলে নামে যে আলোক
জোনাকির দেহ হতে- খুঁজেছি তোমারে সেইখানে-
ধূসর পেঁচার মতো ডানা মেলে অঘ্রানের অন্ধকারে ধানসিড়ি বেয়ে বেয়ে
সোনার সিঁড়ির মতো ধানে আর ধানে
তোমারে খুঁজেছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে।” (শঙ্খমালা)
বনলতা সেন কাব্যে জীবনানন্দ দাশের প্রকৃতি চেতনার পরিচয় সবচেয়ে বেশি নিহিত আছে ‘বনলতা সেন’ কবিতায়। মহাসময়ের সঙ্গে যে মহাজীবনের অনুভব কবি মনে বহন করেছেন, তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান জীবনকে দেখেছেন তিনি এ কবিতায়। এখানে তাঁর প্রিয়াকে আবিষ্কর করেছেন প্রকৃতির মধ্যে। দীর্ঘ ভ্রমনে কবি যখন শ্রান্ত, ক্লান্ত তখন তিনি শান্তি খুঁজে পান নাটোরের বনলতা সেনের কাছে। এ বনলতা সেনের রূপ বর্ণনায় তিনি প্রকৃতির আশ্রয় নিয়েছেন।
“চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙ্গে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।” (বনলতা সেন)
প্রকৃতি জীবনানন্দের দ্বিতীয় প্রিয়া। নানা রূপে তিনি সেই প্রিয়াকে দেখেছেন। কার্তিকের শস্যভারে নত মাঠের দিকে চেয়ে তিনি দেখেছেন সেই সুন্দরীর প্রকৃত রূপটিকে। আলোক উজ্জ্বল রৌদ্রেও কবি তাঁর প্রিয়াকে খুঁজে পেয়েছেন। কখনো হাঁসের গায়ের ঘ্রাণে তাঁর হারানো প্রেমিকার কথা মনে হয়েছে।
“হাঁসের গায়ের ঘ্রাণ-দু’একটা কল্পনার হাঁস;
মনে পড়ে কবেকার পাড়াগাঁর অরুণিমা সান্যালের মুখ;
উড়–ক উড়–ক তারা পউষের জ্যোৎস্নায় নীরবে উড়–ক
কল্পনার হাঁস সব-পৃথিবীর সব ধ্বনি সব রঙ মুছে গেলে পর
উড়–ক উড়–ক তারা হৃদয়ের শব্দহীন জ্যোৎস্নরা ভিতর।” (বুনো হাঁস)
প্রকৃতি নিয়ে এমন প্রেমানুভূতির কথা বাংলা কাব্যে আমরা খুব কমই পেয়েছি। বাংলায় মাঠে প্রান্তরে, পাড়াগাঁর গায়ে, রূপশালি ধানভানা রূপসীর শরীরের ঘ্রাণ আর কোনো কবি পেয়েছে বলে আমার জানা নেই। এখানেই প্রেমিক কবি বলেছেন- “আমি দেখেছি, আমি পেয়েছি, আমার আর কিছু দেখার নেই, আর কিছু পাবার নেই।”
প্রকৃতিপ্রেমিক কবি তাঁর বনলতা সেন কাব্যে দেখিয়েছেন- যে প্রকৃতিপুঞ্জের মধ্যে একটি নিটোল পরিপূর্ণতা আছে বর্তমান যুগ তাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিচ্ছে রূঢ় হৃদয়হীন যান্ত্রিকতার আঘাতে। এ প্রসঙ্গে ‘শিকার’ কবিতাটি উল্লেখযোগ্য। এখানে কবি বলেছেন বর্তমান যুগে শিকার করছি আমরা নিজেকেই। জীবনের শান্তি, প্রেম, সৌন্দর্যকে। অথবা কবির মতো অনুভূতিশীল, সুক্ষ, সৌন্দর্যচৈতন্যময় তারাই এ যুগের শিকার। ময়ূরের সবুজ ডানার মতো আলো ঝলমল ভোরে সুন্দর, বাদামী হরিণেরে মৃত্যুও বর্ণনার পরই কবি এমনভাবে শিকারী দলের বর্ণনা করেছেন যে, প্রকৃতির শান্ত সুষমাময় সঙ্গতির মধ্যে বর্তমান যুগকে মনে হয় মূর্তিমান তালভঙ্গ।
“সিগারেটের ধোঁয়া,
টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা
এলোমেলো কয়েকটা বন্দুক-হিম-নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম।” (শিকার)
এখানে কবি বুঝাতে চেয়েছেন যে হরিণের মৃত্যু হলো। আর সে তো প্রকৃতপক্ষে প্রাণের হরিণ। ‘আমি যদি হতাম’ কবিতায়ও সৌন্দর্য চেতনার, প্রেমস্পৃহার, সঙ্গতির, সাধনার অপমৃত্যুও কথা বলা হয়েছে। তবে এ কবিতার সুর কিছুটা পৃথক। সৌন্দর্য, প্রেম, পূর্ণতা, এখনো বনহংস অর্থ্যাৎ অন্য প্রাণীর মধ্যে আছে, মানুষের জীবনে তা একেবারেই নেই। বনহংসের জীবনও নষ্ট হয় গুলির আঘাতে কিন্তু সে মৃত্যু আসে অখন্ডরূপে, আর মানুষের জীবনে মৃত্যু আসে টুকরো টুকরো ব্যর্থতায় খন্ডিত হয়ে। এখনো দেখা যায় যুগের সংঘাতে ক্লান্ত কবি বনহংস হয়ে প্রকৃতির বুকে আশ্রয় নিতে চেয়েছেন-
“আমি যদি হতাম বনহংস
বনহংসী হতে যদি তুমি
...................................
তাহলে আজ এই ফাল্গুনের রাতে
ঝাউয়ের শাখার পেছনে চাঁদ উঠতে দেখে
আমরা নিম্নভূমির জলের গন্ধ ছেড়ে
আকাশের রূপালি শস্যের ভিতর গা ভাসিয়ে দিতাম।” (আমি যদি হতাম)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে জীবনানন্দ দাশ সমগ্র জীবনকে প্রকৃতির ভিতর দিয়ে গ্রহণ ও প্রকাশ করেছেন তাই তিনি প্রকৃতির কবি। প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ তিনি তার কাব্যে তুলে ধরেছেন। আলোচনার পরিসমাপ্তিতে তাই একথা বলা যায় জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতির কবি এই অর্থে যে, প্রকৃতিই তাঁর সমস্ত উপলব্ধির রূপক। অবশেষে বলা যায়, জীবনানন্দ দাশের কাব্য চেতনার গভীরে ছিল প্রকৃতির পরিবেশের প্রভাব। প্রকৃতি তাঁর চিন্তার মানস সরোবর। তাঁর জীবনবোধের গভীরে প্রকৃতি চেতনা কর্তৃক এতই প্রবল ছিল যে, তাঁর সমস্ত ভাবনা, চিন্তা, ধ্যান ধারনা ও অনুভব উপলব্ধি, তাঁর জীবন ও কাব্য প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। তাই জীবনানন্দ দাশকে প্রকৃতির কবি বললে কোন অসঙ্গত উক্তি করা হয় না। তিনি প্রকৃতির অন্তরঙ্গ রূপের মধ্যে দিয়ে অন্য কোন চিরকালীন রূপের সন্ধান করেছেন। তাই তিনি মৃত্যুর পর ও প্রকৃতিকে ভালোবেসে, প্রকৃতির উপাদান হয়ে, প্রকৃতির মাঝে আবার জন্মাতে চান-
“আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে- এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হ’য়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়;
হয়তো বা হাঁস হবো-কিশোরীর-ঘুঙুর রহিবে লাল পায়,
সারাদিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে-ভেসে;
আবার আসিব আমি বাংলায় নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে।” (আবার আসিব ফিরে)
লেখক- আখতার ফারুক।
ফোন- ০১৯১৪১৩৯৯১৬/০১৬১৪১৩৯৯১৬
ই-মেইল- afaruque.faruque@gmail.com
শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০১৭
ভালবাসা আজ-
ভালবাসা আজ
ফেসবুকের লাইকে,
ভালোবাসা আজ
বন্ধু সহযোগ বাইকে।।
ভালোবাসা আজ
হাতে হাত রাখা পার্কে,
ভালোবাসা আজ
Apps বলে দেয় কার কে।।
ভালোবাসা আজ
সাজানো গোছানো টুইট,
ভালোবাসা আজ
কমেন্টস কার কতো সুইট।।
ভালোবাসা আজ
চ্যাট বক্সে গ্রীন,
ভালোবাসা আজ
Whatsapp এ লগইন।।
--------------------++++--------------------
নির্জনতা!
ভালবাসা নির্জনতা খোঁজে।
নির্জনতার অভাবে কতো
ভালবাসা তার নিজস্বতা হারায়
তার খবর কেউ রাখে না।
যেমনি ঐ জংলী ফুলটা
কতটুকু অযত্নে অবহেলায় ঝরে যায়
কেউ তার খবর রাখে না।
-----------আখতার ফারুক।
বন্ধু ও বন্ধুত্ব।
"জোছোনার ছটা মাখিয়ে গায়
সুখ নিদ্রা যাবে
স্বপ্ন মাঝে হয়তো তুমি
আমরেই খুজে পাবে"
জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা একা নই। আমাদের নবী করিম (স) বলছেন পথে বের হওয়ার আগে আমাদের একজন বন্ধু নিয়ে বের হওয়া উত্তম। ইংরেজিতে “ I miss you” বলে একটা শব্দ আছে। যার বাংলা অর্থ আমি করেছি- "তোমার জন্য আমার কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে ।
" কলকাতার ব্যান্ড “চন্দ্রবিন্দু”-র গাওয়া একটা গান-" ছেঁড়া ঘুড়ি রঙ্গিন বল/ এইটুকুই সম্বল/ আর ছিল রোদ্দুরে পাওয়া/ বিকেল বেলা।/ বাজে বকা রাত্রি দিন/ অ্যাস্টেরিক্স টিনটিন/ এলোমেল কথা উড়ে যেত/ হাসির ঠেলায়।"
দারুন গান । সংকটে, আনন্দে, দুঃখ, বেদনায় বন্ধু হাত বাড়ায় তার বন্ধুটির দিকে। সেই হাত নিষ্পাপ, নির্মল, সকল স্বার্থের উর্ধ্বে। বন্ধুই পারে কেবল তার বন্ধুকে বুঝতে।
প্রথম বন্ধুত্ব কবে হয়েছিল, কীভাবে হয়েছিল সেটি আবিষ্ককার করার চেষ্টা এখন পন্ডশ্রম। তবে আদি পিতা আদমের সঙ্গে তাঁর সঙ্গিনী হাওয়ার সখ্যতাই আমরা পৃথিবীর প্রথম বন্ধুত্ব হিসেবে ধরে নিতে পারি। প্রত্যেক মানুষের জন্যই প্রয়োজন অন্তত একজন ভালো বন্ধু। যার কাছে মনের সব কথা বলা যায় নির্দ্বিধায়, যার সাথে সব সুখ দুঃখ ভাগ করে নেওয়া যায়। সুখের দিনে সেই তো পাশে থাকে, আবার দুঃখেও থাকে ছাঁয়ার মতো। একজন ভালো বন্ধু আসলে মানুষের অদৃশ্য বিবেকের মতো। কারণ সে ভালো কাজে উৎসাহ দেয় আর খারাপ কাজে নিরুৎসাহিত করে সবসময়। তাই তো, ভালো বন্ধুত্ব টিকে থাকে সারাজীবন। প্রাচীন প্রবাদে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হতো, 'সম্পর্ক যখন জ্বরে পুড়ে তখন তার নাম হয় ভালবাসা, আর ভালবাসা যখন জ্বরে পুড়ে তার নাম হয় বন্ধুত্ব। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিস্টটল বলেছেন, 'দুটি দেহে একটি আত্মার অবস্থানই হলো বন্ধুত্ব।' এমারসন বলেছেন, 'প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টির নাম বন্ধুত্ব।' নিটসে বলেছেন, 'বিশ্বস্ত বন্ধু হচ্ছে প্রাণরাকারী ছায়ার মতো। যে তা খুঁজে পেলো, সে একটি গুপ্তধন পেলো।'
সত্যিই কোন রকম রক্ত সম্পর্কের না হওয়া সত্ত্বেও একজন মানুষ আরেকজন মানুষের এতো আপন হতে পারে এবং নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে পারে সেটা একজন সত্যিকার বন্ধুর মাধ্যমেই উপলদ্ধি করা যায়। তাই একজন ভালো বন্ধু পাওয়া এবং কারও ভালো বন্ধু হওয়া মানে অনেক বড় অর্জন। তাই সময় থাকতে সত্যিকার বন্ধুকে চিনে নিতে ভুল করো না।
"আয় আরেকটিবার আয়রে সখা,
প্রাণের মাঝে আয়-
মোরা সুখের-দুঃখের কথা কব
প্রাণ জুড়াবে তায়... "
যাকে বন্ধু বলে পরিচয় দেই, কখনো কি ভেবে দেখেছি কেন তাকে বন্ধু বলছি।! না, ভাবি না। বন্ধুত্ব কোন সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা বিচার করে না। বয়সে বন্দি নয় বন্ধুত্ব। লিঙ্গান্তর নিয়ে বিভেদ নেই বন্ধুত্বে। শিক্ষা-অর্থবিত্ত-ধর্ম মানে না বন্ধুত্ব। কখনো কখনো রাস্তার একজন অশিক্ষিত টোকাই বন্ধু হয়ে যায়। বন্ধু শিক্ষিত হতে হবে এমন তো কোন কথা নেই। কখনো কখনো একজন অসুন্দর মানুষ প্রাণের বন্ধু হয়ে যায়। বন্ধুত্বেই পবিত্র সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায়। একজন চরম নাস্তিকও বন্ধু হয়। বন্ধুত্ব যে কখন কোথায় তার স্থান দখল করে তা কেউ বলতে পারেনি, পারবেও না।
বন্ধুত্ব একটি স্বর্গীয় জিনিস । চাইলেই পাওয়া যায়না, অর্জন করতে হয় । একবার অর্জন করা গেলে সাড়া জীবন এটি ছায়ার মতো পাশে থাকে ।
বন্ধুত্বের জয় হউক।
-আখতার ফারুক।
- Aktar Faruque
(উৎসর্গ- নাসরিন রহমান তাহমিন কে)
বন্ধু, তোমার মতো কে বুঝে আমায়।
কোন এক পড়ন্ত বর্ষার ক্লান্ত বিকেল ছিল-
আমার রঙ হীন ধূসর মৌনমগ্ন ক্যাম্ভাস
পড়ে ছিল নিঃসঙ্গ বিষন্নতায় গণনাহীন সময় জুড়ে।
আমার নির্বিকার প্রতিটি দিন-রাত
প্রতিটি ক্ষণই রচনা করতো এক ভাবনাময় কষ্ট গল্প...!
আমার সুন্দর স্বপ্নজুড়ে কেবল ধূলো জমে-
আমার সৃষ্টিশীল হাত ছিল স্থির-
স্থির ছিল আমার সময় গুলোও।।
অথচ, তুমি আমায় হঠাৎ সম্ভোধন করলে ‘কল্পনার সেই বন্ধু’ বলে।
নিজেকে কখনো এতোটা দামি স্থানে ভাবিনি আমি!
তোমার নান্দনিক কথা-আচরণ-সব শৈল্পিক উপাদান
আমার জীবনে নিয়ে এলো এক নতুন ভূবন।।
আমার দীর্ঘ নিরবতা তোমাকে ভাবিয়েছে জানি-
আমি মগ্ন ছিলাম অন্যকিছু ভেবে.....
অথচ, অবাধ্য সময় আমায় ডিঙ্গিয়ে চলে গেছে বহুদূর!
নীরব সময়গুলোর প্রতিটি পরত জুড়ে
খোঁজেছিলাম নিজেকে, নিজের সত্তাকে
আবেগ আর সত্যিকারের রূপকে।।
বেশিরভাগ সম্পর্কেরই কোন নাম হয় না।
যেমন তোমার আমার সম্পর্ক!!!
কখনো ভাবি বন্ধু, কখনো ভাবি হৃদয় সর্বস্ব একজন
কখনো ভাবি তুমি কেউ নও-
এ কথাই ভেবেছি অহর্নিশ বয়ে যাওয়া সময় জুড়ে।।
অবাধ্য সময় জুড়ে একবারও মনে হয়নি
কোন সুশীতল স্বপ্নের কথা,
একবারও মৌন ক্যানভাস করে উঠেনি
কোন প্রাণবন্ত রঙ্গের ঘ্ঙ্গুুর নাচন শব্দ।
কেবল অনুভবে ছিল একটা আত্মপ্রত্যয়ের স্বপ্ন।।
দূঃখ-স্বপ্ন-দৃঢ়তা আমার সমস্ত আমিত্ব কা^ঁপিয়ে যায়,
আমার অহংকারি সত্তাকে বিচলিত করে-
জেগে উঠি আমি নতুন ভাবে, নতুনরূপে।
এভাবেই কি মুছে যায় সব সম্পর্ক?
তবে কি এ নিস্তব্ধতা ভাল নয়?
জীবনে একজন সত্যিকারের বন্ধুর খুব প্রয়োজন-
অথচ আমি চকোরীর জোছনা বিলাসের মতো
একজন হৃদয় সর্বস্ব বন্ধুর জন্যে পেরিয়ে যাই
যোজন যোজন মাইল একলা পথে...
তারপর, তুমি ভোরের আকাশ, নব দিগন্ত।
অনেক কথার কোন উপযুক্ত শব্দ হয় না,
তাই হয়েতো তোমার কোন বিশ্লেষণ সম্ভব নয়।।
জীবনটাকে আমি দেখিছি বাহির থেকে
তার ভিতরে ঢোকার সাধ-সাধ্য কোনটায় আমার নেই।
সাধটাকে মেরেছে অন্য কেউ আর সাধ্যটাকে আমি-
তারপরও সেই দূবোর্ধ জীবনকে আঁকড়ে ধরে
বয়ে যাচ্ছে তরঙ্গহীন ¯্রােত।
বাধ্য বালকের মতো তোমার মমতা-ভালবাসা জড়ানো আদেশ মেনে নিয়ে
হাত বাড়িয়েছি সৃষ্টিশীল কাজে, ভুলেছি কলংকিত অতীত।
তোমার কথা ভেবে ভাবিনি অতিত আর মৃত্যুর কথা।
কিন্তু একদম যে মাথাচাড়া দেয়নি তা নয়...।।
বন্ধু আবেগকে পশ্রয় দেইনি একবারের জন্যও
যেখানে আবেগ রুক্ষ বাস্তবতার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে,
অকপটে মেনে নিয়েছি নিজের হার!
সরে এসেছি সে অম্লমধুর জাল থেকে।
কিন্তু তোমার বেলায়-
তোমার মতো করে কে অত বোঝে আমায়?
হোক না তা অল্প সময়ের পরিচয়-
কাকে আর বলতে পারি হৃদয়ের গভীরে লুকায়িত থাকা
কষ্টের অবগাহন কিংবা আনন্দের ফুলঝুরি।
সভ্যতা আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষের যুগে
তেমন আর মাটির মানুষ কই?
আর তথাকথিত বন্ধুরা-
সেতো কেবল লৌকিকতা।।
হয়তো তোমার প্রতি কিছুটা অভিমান ছিল-
বার বার তোমায় প্রশ্ন করেছি-
‘আমার জন্য তোমার এতো ভালবাসা, আমি কে হই তোমার?’
কিংবা তুমি যে আমায় ভালবাস বল না কেন বার বার?
তুমি কথার ছলে এড়িয়ে গেছো...
মেনে নিয়েছি এজীবন, জীবনের অপার-অসীম বিস্ময়তা!
সত্যিইতো সব হারানোর মাঝে
মন হারানোর ইতিকথা নিয়ে কি খুব বেশী লিখা যায়?
চলার পথের শত ক্রুরতা, অবিশ্বাস নিস্প্রেম নিয়েইতো
বেঁচে আছি আমি, বেঁচে থাকতে হবে...
কিছুই হয়না পাওয়া, কিছুই হয়না ছোঁয়া
ফেরারী সময় পালিয়ে যায় বর্ষ-যুগ শতাব্দির অন্তরালে।
ভালো থেকো- এক শুভ্র সকালের সতেজ ঘ্রাণের মতো-
কেননা, তোমাকে ভাল থাকতেই হবে ,
আমার জন্য- আমাদের জন্য।।
-----------------------------------
আবার ফিরবেই সে।
খুব চেনা রাস্তা দু’কদম হাঁটলেই যেখানে ফুরিয়ে যেত,
এখন সেখানে নিরশার চাষ চলছে।
নিঃছিদ্র বেষ্টনি দিয়ে তাকে অন্তরীন করা হয়েছে
রাস্তা খোঁড়ার অপরাধে।
আজ সে ফেরারী পাখি-
কুলায় ফেরার অধিকার হারিয়ে
সারাদিন হেঁটেও গন্তব্য নেই কোথাও!
অথচ, সময়ের সাথে হেঁটে গেলে
ভাঙ্গা রাস্তায় বসত পীচ,
বিশুদ্ধ বাতাসে ভরত বুক।
বুকের স্বপ্নগুলো একটু উস্কে দিলে
যেখানে ধরতো আগুন-
এখন সেখানে বৃষ্টিভেজা কাঠের স্তুপ!
আজ পৃথিবীর সবটুকু অক্সিজেন এনেও
জ্বালাতে পারছেনা এক টুকরো কাঠ।
এখন গ্রহণের কাল, ক্ষরণের বেদনা
স্বপ্নরা পালিয়ে দুঃস্বপ্নরা বেঁধেছে বাসা।
নিরাশার রাস্তাগুলো খুব পিচ্ছিল-
বার বার পড়ে যাবার ভয়!
এমন শূন্যঘেরা পিচ্ছিল পথে
হেঁটে যায় এক যুবক।
বুকে তার দুঃস্বপ্ন, চোখের মধ্যে নিরাশা
তবুও সে হেঁটে যায়-
কারণ, সে জানে-
স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন, আশা-নিরাশা, আলো-অন্ধকার
পৃথিবীর বুকে পাশাপাশি বাস করে।।
ভালবাসি তোমায়, শুধু তোমায়।
ব্যাথা দিয়ে বল, ব্যাথা পেয়েছ?
হাসিয়ে বল, হাসসো কেন?
আমি কিছুই বলি না-
শুধু তোমার চোখে চোখ রেখে বলি- ও কিছু না।।
কি উন্মাদ তুমি!
আমায় কাছে টেনে বলো- কাছে এসো না।
প্রশ্ন করে বলো- কথা বলো না।
পাশে বসে বলো- দূরে যাও না।
হাত ছোয়ে বলো- এসব কি?
হাসতে হাসতে বলো- কী বিশ্রী তুমি!
শুধু তোমার চোখে চোখ রেখে বলি- ও কিছু না।।
কি আনমনা তুমি!
হাতে ঘড়ি নিয়ে বলো- কয়টা বাজে?
ফুলে নাক শুকে বলো- ফুল ভাল না।
কাধে কাধ রেখে বলো- তুমি ভাল না।
ঘুম ঘুম চোখে বলো- ঘুম আসে না।
নির্বাক আমি কিছুই বলি না।
শুধু তোমার চোখে চোখ রেখে,
ফিস ফিস করে শিশিরের শব্দের মতো বলি-
ভালবাসি তোমায়, শুধু তোমায়।।
----------------------------------
ভালবাসাগুলো নির্জিব তোমাকে ছাড়া।
হঠাৎ করেই মরুভূমির মাঝে গজিয়ে উঠা
ক্যাক্টাসের বেগুনি ফুল দেখে-
মনে হয় তোমাকে বড় দরকার।
কতদূর তুমি; তোমাকে ভাবলে
ছুঁয়ে দেয়ার তৃষ্ণাটা বেড়েই যায়।
ঘুম ভেংগে চায়ের কাপটা হাতে নিতেই
মনে হয় এমূর্হুতে তোমাকে বড্ড প্রয়োজন।
অন্তহীন পথের যাত্রায় ক্ষয়ে যাওয়া জুতো জোড়া
হাতে তুলে সমুদ্র জলে পা ডুবাই।
চারপাশে সব হাসিখুশি প্রাণের মেলায়,
সব মুগ্ধতায় তোমাকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশী চাই।
তুমি দূর প্রবাসে; তোমাকে বড় দরকার-
দেখা হবে হবে করেও আজো দেখা হয়নি!
অথচ ঘুমালেই তোমার দুটি হাত
তোমায় জড়িয়ে থাকার স্বপ্নটা তাড়া করে।
দেখা হয়নি কখনো তবুও স্বপ্নের মাঝে
তোমার সাথে কাটানো মূর্হুতগুলো
স্থির ছবি হয়ে ভেসে থাকে।
চোখ ভরতি জলে ঘুম ভাংগে প্রতি প্রভাতেই।
রাতের পর রাত আমি জেগে থাকি
তুমিহীনতার অস্থিরতায়।।
হাজার মাইল দূর থেকে ভেসে আসে তোমার স্বর
মিনিট সেকেন্ড অথবা আধমূর্হুতের জন্য-
আজন্ম তৃষ্ণা আমার বেড়েই চলে।
মুঠোফোনে কথা বললেই কি-
কষ্টগুলো দুরে সরে! কষ্টগুলো হারায় না!!
রাতের অন্ধকারের কালো মেঘেও
কষ্টগুলো চুপটি করে হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ে।
ভালবাসাগুলো নির্জিব তোমাকে ছাড়া
তাইতো তোমাকে খুঁজে বেড়াই পথের পর পথ পেরিয়ে।।
--------------------------------------------------
একুশের আক্ষেপানুরাগ
বেশ কয়েক বছর থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার ছিল অফিস আদালতে শতভাগ বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিদেশী ভাষার ব্যবহার কমানো, ব্যানার, ফেস...

-
আধুনিক বাংলা কাব্যের ইতিহাসে ত্রিশোত্তর যুগের কবিদের মধ্যে জীবনান্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) সর্বশ্রেষ্ঠ। মনন, মেধায়, চিন্তা-চেতনায়, চিত্রকল্প রচনা...
-
প্রমথ চৌধুরী বলে ছিলেন, "বাংলা ভাষা আহত হয়েছে সিলেটে, নিহত হয়েছে চট্টগ্রামে".... চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে ব্যপারটা আসলেই চিন্তা...
-
"বুঝা" এবং "বোঝা" শব্দ দুইটি নিয়ে আমাদের মধ্যে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। আমরা অনেকেই "বুঝা" এর জায়গায় "বোঝা...