সভ্য দুনিয়ার অন্যতম আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সাহিত্য। এটি নিয়ে মতপার্থক্যের অন্ত নেই। তবে যদি একান্ত ইতিবাচক দিক থেকে জানতে চাওয়া হয় সাহিত্য কী? এর উত্তরেও অনেকে অনেক কথাই বলবেন। কেউ বলবেন, সাহিত্য সমাজের দর্পণ- সেটা ভালোমন্দ যাই হোক। কেউ বলবেন, সাহিত্য নিঃস্বতা ও একাকিত্বের সঙ্গী, ভালোলাগা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। কেউ বলবেন, সাহিত্য চিন্তার খোরাক, একটুখানি সুখের স্পর্শ। কেউ বলবেন, সাহিত্য শিক্ষার উপকরণ, মননশীলতা বিকাশে সহায়ক, জীবনের প্রতিচ্ছবি। যে যাই বলুন তবে সাহিত্য যে ক্ষতিকর, মিথ্যা, অশ্লীলতা, অজ্ঞতা, অন্ধতা ও পক্ষপাতমুক্ত হতে হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সাহিত্যের নামে যা-তা, চরিত্র নষ্টকারী অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ লেখা, পরস্পর হিংসা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো কিংবা অজ্ঞতা-অন্ধতার লালন কখনোই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। মানুষের খাদ্যে যেমন বাছবিচার আছে, কাজকর্মে নিয়ম-কানুন আছে, রাষ্ট্রে সংবিধান আছে, তেমনি সাহিত্যেও বাছ-বিচার অবশ্যই থাকবে। থাকতে হবে। থাকতে বাধ্য। সব আবেগ-অনুভূতির উদ্গীরণই সাহিত্য নয়। শিক্ষণীয়ও নয়।
আমরা বলতে চাই, সাহিত্য জীবনের চূড়ান্ত সত্যকে আবিষ্কার করতে না পারলে সেটা সাহিত্য নয়। আর যদি জীবনের চূড়ান্ত বা চিরন্তন সত্য বলে কিছু না থাকে তাহলে সাহিত্য বলেও কিছু থাকে না। তর্কবিতর্ক কোনোটারই কোনো অর্থ হয় না। আমরা আলোচনা-পর্যালোচনা ও তর্কবিতর্ক করি আপেক্ষিক সত্যের বাইরে ধ্রুব সত্য বলে একটা বিষয় আছে বলেই। সাহিত্য জীবন ও জগতের সত্য ও একান্ত গভীর উপলব্ধির লিখিত প্রকাশ। সাহিত্য সত্যের বাহন অথবা সত্য অনুসন্ধানের মাধ্যম। কোনো সুসভ্য ও আধুনিক সমাজ সাহিত্য ছাড়া অচল, মৃত। তাই প্রকৃত সাহিত্য রচনা, সাহিত্য সমালোচনা ও উৎকর্ষ সাধন অপরিহার্য।
প্রবাদ আছে, বাঘ নেই দেশে বিড়ালই বাঘ। আজ প্রকৃত সাহিত্যিক, চিন্তাশীল ও যোগ্যতম ব্যক্তির বড়ই অভাব। তাই বলে মাঠ শূন্য নেই। থাকার কথাও নয়। প্রতি বছর দেশে-বিদেশে অসংখ্য অনুষ্ঠান হচ্ছে এ নিয়ে। পুরস্কার বিতরণ হচ্ছে এক্ষেত্রে। প্রায় সবই রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক ও অন্যান্য সঙ্কীর্ণ দলীয় তথা গোষ্ঠীস্বার্থ বিবেচনায়। পরিস্থিতি বড়ই নাজুক। তাই পূর্ণ আন্তরিকতা সত্ত্বেও হঠাৎ করেই কারও পক্ষে সাহিত্য-অসাহিত্য-কুসাহিত্যের পার্থক্য রচনা বড়ই কঠিন। তবে আমরা আশাবাদী, আমাদের দেশের প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়াগুলো নবীন-প্রবীণ লেখকদের মধ্য থেকে একদল খাঁটি মানুষ ও সুসাহিত্যিক যেমন খুঁজে বের করবে, তেমনি গড়েও তুলবে। শিগগিরই সাহিত্যের সঠিক সংজ্ঞাও নির্ধারণ করে দেশ ও জাতির পরম উপকার সাধন করবে।
আমি খুবি সাধারণ একজন। ভালবাসি বই পড়তে। ভালবাসি ভ্রমণ করতে। Mobile No- 0914139916, 01614139916 afaruque.faruque@gmail.com www.facebook.com/aktar.faruque.ctg
মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
সাহিত্য চর্চা প্রসঙ্গে আমার মতামত।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
একুশের আক্ষেপানুরাগ
বেশ কয়েক বছর থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার ছিল অফিস আদালতে শতভাগ বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিদেশী ভাষার ব্যবহার কমানো, ব্যানার, ফেস...

-
আধুনিক বাংলা কাব্যের ইতিহাসে ত্রিশোত্তর যুগের কবিদের মধ্যে জীবনান্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) সর্বশ্রেষ্ঠ। মনন, মেধায়, চিন্তা-চেতনায়, চিত্রকল্প রচনা...
-
প্রমথ চৌধুরী বলে ছিলেন, "বাংলা ভাষা আহত হয়েছে সিলেটে, নিহত হয়েছে চট্টগ্রামে".... চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে ব্যপারটা আসলেই চিন্তা...
-
"বুঝা" এবং "বোঝা" শব্দ দুইটি নিয়ে আমাদের মধ্যে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। আমরা অনেকেই "বুঝা" এর জায়গায় "বোঝা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন