শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮

বন্ধু ও বন্ধুত্ব

"জোছোনার ছটা মাখিয়ে গায়
সুখ নিদ্রা যাবে
স্বপ্ন মাঝে হয়তো তুমি
আমরেই খুজে পাবে"

জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা একা নই। আমাদের আমাদের নবী করিম (স) বলছেন পথে বের হওয়ার আগে আমাদের একজন বন্ধু নিয়ে বের হওয়া উত্তম। ইংরেজিতে “ I miss you” বলে একটা শব্দ আছে। যার বাংলা অর্থ আমি করেছি- "তোমার জন্য আমার কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে ।

" কলকাতার ব্যান্ড “চন্দ্রবিন্দু”-র গাওয়া একটা গান-" ছেঁড়া ঘুড়ি রঙ্গিন বল/ এইটুকুই সম্বল/ আর ছিল রোদ্দুরে পাওয়া/ বিকেল বেলা।/ বাজে বকা রাত্রি দিন/ অ্যাস্টেরিক্স টিনটিন/ এলোমেল কথা উড়ে যেত/ হাসির ঠেলায়।"
দারুন গান । সংকটে, আনন্দে, দুঃখ, বেদনায় বন্ধু হাত বাড়ায় তার বন্ধুটির দিকে। সেই হাত নিষ্পাপ, নির্মল, সকল স্বার্থের উর্ধে। বন্ধুই পারে কেবল তার বন্ধুকে বুঝতে।

প্রথম বন্ধুত্ব কবে হয়েছিল, কীভাবে হয়েছিল সেটি আবিষ্ককার করার চেষ্টা এখন পন্ডশ্রম। তবে আদি পিতা আদমের সঙ্গে তাঁর সঙ্গিনী হাওয়ার সখ্যতাই আমরা পৃথিবীর প্রথম বন্ধুত্ব হিসেবে ধরে নিতে পারি। প্রত্যেক মানুষের জন্যই প্রয়োজন অন্তত একজন ভালো বন্ধু। যার কাছে মনের সব কথা বলা যায় নির্দ্বিধায়, যার সাথে সব সুখ দুঃখ ভাগ করে নেওয়া যায়। সুখের দিনে সেই তো পাশে থাকে, আবার দুঃখেও থাকে ছায়ার মতো। একজন ভালো বন্ধু আসলে মানুষের অদৃশ্য বিবেকের মতো। কারণ সে ভালো কাজে উৎসাহ দেয় আর খারাপ কাজে নিরুৎসাহিত করে সবসময়। তাই তো, ভালো বন্ধু টিকে থাকে সারাজীবন। প্রাচীন প্রবাদে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হতো, 'সম্পর্ক যখন জ্বরে পুড়ে তখন তার নাম হয় ভালবাসা, আর ভালবাসা যখন জ্বরে পুড়ে তার নাম হয় বন্ধুত্ব। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিস্টটল বলেছেন, 'দুটি দেহে একটি আত্মার অবস্থানই হলো বন্ধুত্ব।' এমারসন বলেছেন, 'প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টির নাম বন্ধুত্ব।' নিটসে বলেছেন, 'বিশ্বস্ত বন্ধু হচ্ছে প্রাণরাকারী ছায়ার মতো। যে তা খুঁজে পেলো, সে একটি গুপ্তধন পেলো।'

সত্যিই কোন রকম রক্ত সম্পর্কের না হওয়া সত্ত্বেও একজন মানুষ আরেকজন মানুষের এতো আপন হতে পারে এবং নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে পারে সেটা একজন সত্যিকার বন্ধুর মাধ্যমেই উপলদ্ধি করা যায়। তাই একজন ভালো বন্ধু পাওয়া এবং কারও ভালো বন্ধু হওয়া মানে অনেক বড় অর্জন। তাই সময় থাকতে সত্যিকার বন্ধুকে চিনে নিতে ভুল করো না।

"আয় আরেকটিবার আয়রে সখা,
প্রাণের মাঝে আয়-
মোরা সুখের-দুঃখের কথা কব
প্রাণ জুড়াবে তায়... "
যাকে বন্ধু বলে পরিচয় দেই, কখনো কি ভেবে দেখেছি কেন তাকে বন্ধু বলছি।! না, ভাবি না। বন্ধুত্ব কোন সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা বিচার করে না। বয়সে বন্দি নয় বন্ধুত্ব। লিঙ্গান্তর নিয়ে বিভেদ নেই বন্ধুত্বে। শিক্ষা-অর্থবিত্ত-ধর্ম মানে না বন্ধুত্ব। কখনো কখনো রাস্তার একজন অশিক্ষিত টোকাই বন্ধু হয়ে যায়। বন্ধু শিক্ষিত হতে হবে এমন তো কোন কথা নেই। কখনো কখনো একজন অসুন্দর মানুষ প্রাণের বন্ধু হয়ে যায়। বন্ধুত্বেই পবিত্র সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায়। একজন চরম নাস্তিকও বন্ধু হয়। বন্ধুত্ব যে কখন কোথায় তার স্থান দখল করে তা কেউ বলতে পারেনি, পারবেও না।

বন্ধুত্ব একটি স্বর্গীয় জিনিস । চাইলেই পাওয়া যায়না, অর্জন করতে হয় । একবার অর্জন করা গেলে সাড়া জীবন এটি ছায়ার মতো পাশে থাকে ।
বন্ধুত্বের জয় হউক।
-আখতার ফারুক।
- Aktar Faruque

অনুভূতি.....

কষ্ট পেলে কোন সমস্যা নেই
কষ্টে বুকের ভেতরের অনুভূতিগুলো বরফ হয়ে যায়-
তারপর গভীর রাতে সেই বরফ গলে
টপ টপ করে গাল বেয়ে ঝরে পড়ে ...
শত সহস্র ফোঁটায় ফোঁটায় একদিন
পুরো বরফটা গলে যায় ...
বুকের ভেতর আর কিছু আটকে থাকে না !!

রাগ হলে কোন সমস্যা নেই
রাগ বেশিক্ষণ থাকে না-
কিছুক্ষণ চিৎকার করলেই কমে যায় ...
ঝগড়া করলেও কমে যায়....
নাহয় দুটো কাচের জিনিস ভাঙতে হয়,
রাগের আগুন বেশিক্ষণ জ্বলে না ... নিভে যায় !!

অনুভূতিহীন হয়ে গেলেই সমস্যা ...
পাথর হয়ে গেলেই সমস্যা!
কষ্টের বরফ গলে যায় ...
দুঃখের মেঘ ঝরে বৃষ্টি নামে ...
রাগের আগুন নিভে ফাগুন আসে ...
কিন্তু হৃদয়টা পাথর হয়ে গেলে-
সেই পাথরকে কিছু করা যায় না।
পাথর গলে না ...
পাথর ভাঙলেও-
টুকরো টুকরো পাথরই হয়।
একবার যে হৃদয় পাথর হয়ে গেছে,
তাকে আর আগের অবস্থায়
ফেরানো যায় না!!
-------+---------+----------

বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮

সখি, ভালবাসা কারে কয়?

প্রেম আপন গভীরতায় নিজের মধ্যে একটি মোহাবেশ রচনা করে। সেই মোহের দ্বারা যাকে ভালোবাসি আমরা তাকে নিজের মনে মনে মনোমত গঠন করি। যে সৌন্দর্য তার নেই, সে সৌন্দর্য তাতে আরোপ করি। যে গুণ তার নেই, সে গুণ তার কল্পনা করি। সে তো বিধাতার সৃষ্ট কোনো ব্যক্তি নয়, সে আমাদের নিজ মানসোদ্ভূত এক নতুন সৃষ্টি। তাই কুরূপা নারীর জন্য রূপবান, বিত্তবান তরুণেরা যখন সর্বস্ব ত্যাগ করে, অপর লোকেরা অবাক হয়ে ভাবে, “কী আছে ঐ মেয়েতে, কী দেখে ভুললো?” যা আছে তা তো ঐ মেয়েতে নয়– যে ভুলেছে তার বিমুগ্ধ মনের সৃজনশীল কল্পনায়। আছে তার প্রণয়াঞ্জনলিপ্ত নয়নের দৃষ্টিতে। সে যে আপন মনের মাধুরী মিশায়ে তাহারে করেছে রচনা।

জগতে মূর্খরাই তো জীবনকে করেছে বিচিত্র; সুখে দুখে অনন্ত মিশ্রিত। যুগে যুগে এই নির্বোধ হতভাগ্যের দল ভুল করেছে, ভালোবেসেছে, তারপর সারা জীবনভোর কেঁদেছে। হৃদয়নিংড়ানো অশ্রুধারায় সংসারকে করেছে রসঘন, পৃথিবীকে করেছে কমনীয়। এদের ভুল, ত্রুটি, বুদ্ধিহীনতা নিয়ে কবি রচনা করেছেন কাব্য, সাধক বেঁধেছেন গানচিত্র, ভাষ্কর পাষাণ-খণ্ডে উৎকীর্ণ করেছেন অপূর্ব সুষমা। জগতে বুদ্ধিমানেরা করবে চাকরি, বিবাহ, ব্যাংকে জমাবে টাকা, স্যাকরার দোকানে গড়াবে গহনা; স্ত্রী, পুত্র, স্বামী, কন্যা নিয়ে নির্বিঘ্নে জীবন-যাপন করবে সচ্ছন্দ সচ্ছলতায়। তবু মেধাহীনের দল একথা কোনদিনই মানবে না যে, সংসারে যে বঞ্চনা করল, হৃদয় নিয়ে করল ব্যঙ্গ, দুধ বলে দিল পিটুলী– তারই হলো জিত, আর ঠকল সে, যে উপহাসের পরিবর্তে দিল প্রেম।

অতি দুর্বল সান্ত্বনা। বুদ্ধি দিয়ে, রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে বলা সহজ–
"জীবনের ধন কিছুই যাবে না ফেলা
ধূলায় তাদের যত হোক অবহেলা।"

কিন্তু জীবন তো মানুষের সম্পর্ক বিবর্জিত একটা নিছক তর্ক মাত্র নয়। শুধু কথা গেঁথে গেঁথে ছন্দ রচনা করা যায়, জীবন ধারণ করা যায় না।

যে নারী, প্রেম তার পক্ষে একটা সাধারণ ঘটনা মাত্র। আবিষ্কার নয়, যেমন পুরুষের কাছে। মেয়েরা স্বভাবত সাবধানী, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর বাঁধে। ছেলেরা স্বভাবতই বেপরোয়া, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর ভাঙ্গে। প্রেম মেয়েদের কাছে একটা প্রয়োজন, সেটা আটপৌরে শাড়ির মতই নিতান্ত সাধারণ। তাতে না আছে উল্লাস, না আছে বিষ্ময়, না আছে উচ্ছ্বলতা। ছেলেদের পক্ষে প্রেম জীবনের দুর্লভ বিলাস, গরীবের ঘরে ঘরে বেনারসী শাড়ির মতো ঐশ্বর্যময়, যে পায় সে অনেক দাম দিয়েই পায়। তাই প্রেমে পড়ে একমাত্র পুরুষেরাই করতে পারে দুরূহ ত্যাগ এবং দুঃসাধ্যসাধন। জগতে যুগে যুগে কিং এডওয়ার্ডেরাই করেছে মিসেস সিম্পসনের জন্য রাজ্য বর্জন, প্রিন্সেস এলিজাবেথরা করেনি কোনো জন, স্মিথ বা ম্যাকেঞ্জির জন্য সামান্য ত্যাগ। বিবাহিতা নারীকে ভালোবেসে সর্বদেশে সর্বকালে আজীবন নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছে একাধিক পুরুষ; পরের স্বামীর প্রেমে পড়ে জীবনে কোনদিন কোনো নারী রয়নি চিরকুমারী। এমন প্রেমিকের জন্য কোন দিন সন্ধ্যাবেলায় তার কুশল কামনা করে তুলসীমঞ্চে কেউ জ্বালাবে না দীপ, কোন নারী সীমন্তে ধরবে না তার কল্যাণ কামনায় সিদুরচিহ্ন, প্রবাসে অদর্শনবেদনায় কোন চিত্ত হবে না উদাস উতল। রোগশয্যায় ললাটে ঘটবে না কারও উদ্বেগকাতর হস্তের সুখস্পর্শ, কোনো কপোল থেকে গড়িয়ে পড়বে না নয়নের উদ্বেল অশ্রুবিন্দু। সংসার থেকে যেদিন হবে অপসৃত, কোন পীড়িত হৃদয়ে বাজবে না এতটুকু ব্যথা, কোনো মনে রইবে না ক্ষীণতম স্মৃতি। প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয়না অথচ দহন করে। সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন বহু কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য পুরুষ।।

ভালবাসা নিয়ে কবি গুরু কি বলেন?

তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’—

সখী, ভালোবাসা কারে কয় ! সে কি কেবলই যাতনাময় ।

সে কি কেবলই চোখের জল ? সে কি কেবলই দুখের শ্বাস ?

লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ ।

আমার চোখে তো সকলই শোভন,

সকলই নবীন, সকলই বিমল, সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন,

বিশদ জোছনা, কুসুম কোমল— সকলই আমার মতো ।

তারা কেবলই হাসে, কেবলই গায়, হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়—

না জানে বেদন, না জানে রোদন, না জানে সাধের যাতনা যত ।

ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে, জোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়,

হাসিতে হাসিতে আলোকসাগরে আকাশের তারা তেয়াগে কায় ।

আমার মতন সুখী কে আছে। আয় সখী, আয় আমার কাছে—

সুখী হৃদয়ের সুখের গান শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ ।

প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল একদিন নয় হাসিবি তোরা—

একিদন নয় বিষাদ ভুলিয়া সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা

অপেক্ষা-

তোমার অপেক্ষায় থাকি...........
অপেক্ষার পর ও অপেক্ষা!
ফুল ফোটে আর ঝরে-
বসন্ত ও ফিরে যায়,
তবুও তোমার আসার সময় খবর নেই।
তুমি কি ঠিক করে ফেলেছ
তুমি আসবে না?
চিন্তার স্বাধীনতা সব সময় ছিল।
এসে বিড়ম্বনা পোহানোর চেয়ে
না আসা-ই ভাল।

মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮

চট্টগ্রামের ভাষা ও সংস্কৃতি।

চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। জানা ইতিহাসের শুরু থেকে চট্টগ্রামে আরাকানী মঘীদের প্রভাব লক্ষনীয়। ফলে গ্রামীণ সংস্কৃতিতেও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। সে সময় এখানকার রাজারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী হওয়ায় তার প্রভাবও যথেষ্ট। সুলতানি, আফগান এবং মোগল আমলেও আরাকানীদের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই ছিল। ফলে শেষ পর্যন্ত মঘীদের প্রভাব বিলুপ্ত হয়নি। এছাড়া চট্টগ্রামের মানুষ আতিথেয়তার জন্য দেশ বিখ্যাত।

চট্টগ্রামের বর্তমান সংস্কৃতির উন্মেষ হয় ১৭৯৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পর। এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে সামাজিক ধানোৎপাদন ও বন্টনে পদ্ধতিগত আমূল পরিবর্তন হয়। অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও একটি নতুন মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। নতুন এরই ফাঁকে ইংরেজরা প্রচলনা করে ইংরেজি শিক্ষা। মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে পাশ্চাত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করে।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের ইতিহাস সমৃদ্ধ। শেফালী ঘোষ এবং শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণবকে বলা হয় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞি। মাইজভান্ডারী গান ও কবিয়াল গান চট্টগ্রামের অন্যতম ঐতিহ্য। কবিয়াল রমেশ শীল একজন বিখ্যাত কিংবদন্তি শিল্পী। জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলস, এল আর বি, রেঁনেসা, নগরবাউল এর জন্ম চট্টগ্রাম থেকেই। আইয়ুব বাচ্চু, কুমার বিশ্বজিৎ, রবি চৌধুরী, নাকিব খান, পার্থ বডুয়া, সন্দিপন, নাসিম আলি খান, মিলা ইসলাম চট্টগ্রামের সন্তান। নৃত্যে চট্টগ্রামের ইতিহাস মনে রখার মত। রুনু বিশ্বাস জাতীয় পর্যায়ে বিখ্যাত নৃত্যগুরু। চট্টগ্রামের বিখ্যাত সাংস্কৃতিক সংগঠন হল দৃষ্টি চট্টগ্রাম www.drishtyctg.com, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা, আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমি, প্রাপন একাডেমি, উদিচি, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, ফু্লকি, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা, রক্তকরবী, আর্য সঙ্গীত, সঙ্গীত পরিষদ। মডেল তারকা নোবেল, মৌটুসি, শ্রাবস্তীর চট্টগ্রামে জন্ম । সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মুসলিম হল, থিয়েটার ইন্সটিটিউট।

চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক বিকাশের ধারা লক্ষ্য করলে দেখা যায়, রাজনৈতিক তৎপরতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এখানে হাত ধরাধরি করে এগিয়েছে। কখনও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে আসন্ন রাজনৈতিক সংকটের পূর্বলক্ষণ দেখে, কখনও বা রাজনৈতিক আন্দোলনের সহযোগী শক্তি হিসেবে। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পর অসহযোগ, খেলাফত আন্দোলনের কালেও এখানকার সাংস্কৃতিক কর্মতৎপরতা স্তিমিত না হয়ে জোরদার ছিল। বিশ এর দশকে সুরেন্দ্রলাল দাসের নেতৃত্বে আর্য সংগীতের শিল্পী দলের নিখিল বঙ্গ কংগ্রেস সম্মেলনে যোগদান ঐ সময়ে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিকঅঙ্গনের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। চট্টগ্রামের ‘প্রগতিলেখক সংঘের’প্রতিষ্ঠা, কবিয়াল সমিতি গঠন, নিখিল ভারত ছাত্র ফেডারেশনের সম্মেলন উপলক্ষে মাণিক বন্দোপাধ্যায়, সুকান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ সাহিত্যিক কবির আগমন, ১৯৪৬ খ্রীস্টাব্দের অশান্ত পরিবেশে জনগণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভাব জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে নজরুল জয়ন্তী উদযাপন, প্রগতিশীল মাসিক পত্রিকা সীমান্ত প্রকাশের উদ্যোগ ইত্যাদি ঘটনার মধ্য দিয়ে এর বহিঃ প্রকাশ ঘটে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিখ্যাত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, কবিয়ালরমেশ শীল ও ফনি বড়ুয়া, সুরেন্দ্রলাল দাশ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলায় যে সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে সাংস্কৃতিক ফোরাম। এ ফোরামের সমন্বয়ে আছেন বর্তমান জেলা প্রশাসক। এ ফোরামের উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে উন্মুক্ত মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করাসহ অন্যান্য কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।

একুশের আক্ষেপানুরাগ

বেশ কয়েক বছর থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার ছিল অফিস আদালতে শতভাগ বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিদেশী ভাষার ব্যবহার কমানো, ব্যানার, ফেস...