বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯

মাত্রা বিড়ম্বনা!

স্কুল জীবনে প্রথম প্রেমপত্রখানা পাইয়া রীতিমত ভটকে  গিয়াছিলাম। পুরো চিঠি জুড়েই ছিলো প্রেম  ভালোবাসাপূর্ণ নানান কাব্যিক অভিব্যক্তি।
সেইসকল কাব্যিক অভিব্যক্তির শেষে প্রেরক লাল রঙের কালিতে গোটাগোটা হরফে লিখিয়াছিলেন,
'এই পৃথিবী যতদিন থাকিবে, তোমায় আমি ৩৩ দিন ভালোবাসিব'।

সেই পত্র পাঠ মাত্র আমি বেশ কিছুক্ষণ স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া রহিলাম। ছেলেটির প্রতি মনে মনে আমারও এক ধরণের  ভালোলাগা ছিল।
কিন্তু এই জীবনে সে আমাকে কেবল ৩৩ দিন ভালোবাসিবে জানিয়া দুঃখের আর সীমা রহিল না। সেই সীমাহীন দুঃখেই বিন্দুমাত্র দেরী না করিয়া মুখের উপর আমি তাহাকে নাকচ করিয়া দিলাম। কিন্তু মনের ভেতর কী এক  বিরহ ব্যথায় আবিষ্ট হইয়া রহিলাম কয়েকজনম।

তাহারও বহু বছরবাদে তাহার সহিত আমার হঠাৎ দেখা হইলো এক শপিংমলে । ইতোমধ্যে তাহার বিবাহ ও সন্তান হইয়াছে, আমার একি অবস্থা কিন্তু
এতোবছর বাদেও আমার প্রতি তাহার সেই মুগ্ধতার নাকি এতটুকুন ঘাটতি হয় নাই। সে আমাকে দেখিয়া কাতর কন্ঠে কহিল, 'তোমার কি মনে আছে নাযু? কিশোরীবেলার সেই প্রবল ভালোবাসাকে তুমি কি নির্দয়ভাবেই না প্রত্যাঘাত করিয়াছিলে?
ভালোবাসাপূর্ণ সেই হৃদয়খানা কতোখানি কষ্ট পেয়েছিল জানো?'

আমি বলিলাম, 'সে কী ভালোবাসা?
যে কিনা বলে, এই জীবনে আমি তোমাকে মাত্র তেত্রিশ দিন ভালোবাসিব, এ কীরকম ভালোবাসা ছিলো?'

আমার কথা শুনিয়া তাহার মুর্চ্ছা যাইবার উপক্রম হইল। সে তাহার নিজের মাথার তালুতে হস্ত বুলাইতে বুলাইতে কহিল,
'সে কী কথা? আমিতো তেত্রিশ দিন লিখি নাই।
আমি লিখিয়াছিলাম ততদিন।
সম্ভবত বে-খেয়ালে বা অতি আবেগে 
'তত'র উপরে মাত্রা টানিতে ভুলিয়া গিয়াছিলাম।
ফলে 'তত' হয়ে গিয়াছিল '৩৩'!

আমি বিস্ফারিত নেত্রে তাহার দিকে তাকাইয়া ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ভাবিলাম!!!

*'আহা, মাত্রা কী ভয়ানক!!* দুটি জীবনের একটি সফল প্রেমের গল্প চিরকালের জন্য কিরূপ ভয়ানক সমাপ্তির *মাত্রা* টানিয়া দিয়াছে..!!!

অধিকাংশ মানুষ অসুখী কেন?

একদিন এক রাজা তার উযিরকে বললো, আচ্ছা বলো তো, দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষ অসুখী কেন?

এই যে দেখো,আমার কর্তৃত্বে এতোবড় রাজ্য। কোন কিছুর অভাব নেই। তবুও কেমন জানি আমি মনের দিক থেকে সেই শান্তিটা পায় না। সবসময় অশান্তিতে কেন থাকি?

উযির কিছুক্ষন নীরব থেকে বলল,
এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপনাকে ছোট একটি কাজ করতে হবে।
রাজা বললেন, বলো, কী কাজ?

উযির বলল, আপনি একটি থলেতে নিরানব্বইটি দিনার রাখুন। আর থলেটির উপরে লিখে দিন একশত দিনার। এরপর রাত্রিতে সেটা আপনার খাদেমের ঘরের সামনে ফেলে রাখুন।

উযিরের নির্দেশনা মতো রাজা সবকিছু করলেন। রাতে সেই খাদেম বের হল। দেখল একটি থলে পড়ে আছে। ঘরে নিয়ে দেখল তাতে গুণে গুণে নিরানব্বইটি চকচকে দিনার রয়েছে।এরপর লক্ষ্য করল সেই থলেতে লেখা আছে ‘একশত দিনার’।

এক দিনার না পেয়ে বেচারা ঘরের সবাই ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে ওই একটি দিনার খুঁজতে লাগিয়ে দিল। সারারাত চলল খোঁজাখুজি। কিন্তু পাওয়া গেল না।

এদিকে রাজা আর উযির আড়ালে দাঁড়িয়ে সব দেখল।
সকালে সেই খাদেম যখন রাজ দরবারে আসল রাজা দেখল, খাদেমের চেহারা মলিন। কোন বিরাট কিছু হারিয়ে যাওয়ার দুখে জর্জরিত যেন খাদেমের মন।

এবার উযির রাজাকে বলল, রাজা মশাই! ওই একের জন্যই আমরা এতো অসুখী। আল্লাহ আমাদেরকে যত নেয়ামত দিয়েছেন তা হলো নিরানব্বইটি দিনারের মতো। আমরা সেগুলো নিয়ে তুষ্ট থাকি না। শোকরিয়া আদায় করি না।

কি পেয়েছি,আল্লাহ কত দিয়েছেন, সেই হিসাব আমরা ততটুকু করি না,যতটুকু না পাওয়া/ মনের আশা অপুরনের হিসাব টুকু করি।
ওই অপুর্ণতার দিকে মননিবেশ টা আমরা এত কঠিন ভাবে করে ফেলি যে, পাওয়ার হিসাব টুকু আর মনেই থাকে না। যার কারনে সব দিকে শুধু বারবার অপূর্ণতাই চোখে পড়ে।

রাজা মশাই! আমরা যদি আল্লাহ পাকের দেয়া অসংখ্য নেয়ামত নিয়ে একটু মনযোগ দি, তাহলে অশান্তির ছোঁয়া ও আমাদের স্পর্শ করতে পারবে না।

তখন বারবার মনে হবে, আল্লাহ পাক তো আমি না চাইতেই তো আমাকে অনেক দিয়েছেন।

আপনি একটিবার বিশ্বাস করুন, আপনি অনেক ভালো আছেন, দেখবেন,আপনি সত্যিই অনেক ভালো আছেন।

শিক্ষামূলক গল্প পেজ থেকে।

একুশের আক্ষেপানুরাগ

বেশ কয়েক বছর থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার ছিল অফিস আদালতে শতভাগ বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিদেশী ভাষার ব্যবহার কমানো, ব্যানার, ফেস...